শরীরে জ্ঞানেন্দ্রিয় পাঁচটি । চোখ, কান, নাক, ত্বক (চামড়া), আর জিভ। শরীরের অন্যান্য মাংসপেশীর মত জিভও একটা অন্যতম প্রধান মাংসপেশী। এর কাজ হল খাবারের স্বাদ বলে দেওয়া। জিভের রঙ একটু লালচে মত হয় । সামনের দিকটা একটা সরু বা ছাঁচলো, পেছনের দিকটা ক্রমশ চওড়া হয়ে গেছে। সহজ ভাবে বলতে গেলে একটু , ভালো করে দেখলে বুঝবে জিভের ওপর ওপর ছোটো ছোটো দানার মত আছে। এগুলিকে স্বাদ নলিকা বলা হয়। এগুলি স্বাদ-নলিকা হল কোষের সমষ্টি। আর একট, খুটিয়ে দেখ, ওপরভাগে দেখবে চালের মত মিহি শিরা ফুটে আছে । মূলত এই স্বাদ-নলিকা বা কোষের সমষ্টির জন্য জিভে কী স্বাদ পাওয়া যায়।
জিভের এই স্বাদ-নলিকাদের চারভাগে ভাগ করা হয়। এদের কাজ হল প্রধান প্রধান স্বাদ বলে দেওয়া । যেমন: ঝাল, মিষ্টি, তেতো, টক, কষা ও নোনতা । জিভের গোড়ায় পাওয়া যায় ঝাল আর মিষ্টি স্বাদ, পেছনের অংশে তেতো আর দুপাশে নোনতা, টক, কষা। জিভের ঠিক মাঝখানে কোনো স্বাদ নলিকা না থাকা? সেখানে স্বাদ পাওয়া যায় না।

খাবার জিনিস একটু তরল অবস্থায় না হলে সঙ্গে সঙ্গে স্বাদ পাওয়া যায় না। খাবারের খানিকটা ভাগ তাই মুখে গিয়ে লালার সঙ্গে মিশে তরল হবার পর স্বাদ-নলিকাদের জাগিয়ে তোলে। খাবারের ওপর কয়েকটা রাসায়নিক প্রক্রিয়ার ফলে স্নায় তন্ত্রী খবর পায় আর তারপর সে খবর গিয়ে পৌঁছয় মস্তিষ্কের স্বাদকেন্দ্রে । সেখান থেকে স্বাদের ব্যাপারে ফলাফল জানতে পারা যায়। জিভ ছাড়াও আবার নাক আছে। খাবারের গন্ধ নাকে গেলে তবেই স্বাদ ভালো লাগে। তাই সর্দি-কাশি হলে জিভে বাদ পাওয়া যায় না। আসলে প্রায় সব খাবারের স্বাদই নাক প্রথমে বলে দেয়। তাই কথায় বলে ঘ্রাণেন অর্ধ ভোজনম্ । তাই অসংখ-বিসুখ হলে পর বা পেটে কোনো গোলমাল দেখা দিলে জিভের ওপর পুরু , হয়ে ময়লা জমে যায়। এর ফলে স্বাদ- নালিকা পর্যন্ত খাবারের রস পৌঁছতে পারে না। তখন মনে হয় যেন খাবারের স্বাদই পাল্টে গেছে। তারপর খাবার খুব বেশী রকম গরম হলে স্বাদ-নলিকারা অকেজো হয়ে গিয়ে স্বাদে তারতম্য ঘটায় ।
বড়দের জিভে স্বাদ-নলিকার সংখ্যা ছোটদের চাইতে অনেক বেশী। বড়দের ক্ষেত্রে এদের সংখ্যা হল প্রায় তিন হাজার। আবার বয়স বাড়ার সঙ্গে স্বাদ-নলিকারা ক্রমশ ঝিমিয়ে পড়তে থাকে, তারপর এক সময় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে । একজন সত্তর বছরের বুড়োর জিভে স্বাদ-নলিকার সংখ্যা কমতে কমতে বড় জোর চারশো হতে পারে ৷
Read More :- পিঁপড়েদের কি নিজেদের রাজত্ব আছে ?
1 thought on “জিভে কী করে স্বাদ পাওয়া যায় ?”